রবীন্দ্র পূজা
লিখেছেন লিখেছেন শুভ্র পারাবত ০৩ মে, ২০১৪, ০৫:২৩:১১ বিকাল
ভারতবর্ষ যখন প্রায় স্বাধীন হয়ে যাচ্ছে তখনই করমমোহন চাঁদ গান্দী প্রশ্ন উত্থাপন করেন 'স্বাধীন ভারতের রাষ্ট্রভাষা কী হবে? আশ্চর্য! রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো বাংলাভাষার এত বড় কবি রাষ্ট্রভাষার প্রশ্নে হিন্দির পক্ষে অবস্থান নিয়ে গান্দীর কাছে পত্র লিখেন- 'The only possible national language for inter provincial inter course is Hindi in India. (রবীন্দ্র বর্ষপঞ্জি,প্রভাত মুখোপাধ্যায়,কলিকাতা ১৯৮৬ খ্রি., পৃ.৭৮)
এখানে বলার আবশ্যকতা রাখে না যে রবীন্দ্রনাথ বাংলা সাহিত্যের এক অসামান্য প্রতিভা৷ কিন্তু এদেশের কিছু পরজীবী সদৃশ ব্যক্তিত্ব রবীন্দ্রনাথের নামে যা করেন,তা এক কথায় নিরেট রবীন্দ্র পূজা৷ সেই অন্ধপূজারীরা পূজার প্রসাদ তৃপ্তির সাথে আহার করুক,তাতে আমাদের কারো সমস্যা হওয়ার কথা না৷কিন্তু সেই প্রসাদ সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার যে ঘৃণ্য প্রচেষ্টা তা কখনো কাম্য হতে পারে না৷ যাই হোক,যে কথা বলতে চেয়েছিলাম- 'একমাত্র হিন্দি ভাষা ভারতের রাষ্ট্রভাষা হওয়ার যোগ্যতা রাখে' এমন কথা কমপক্ষে রবীন্দ্রনাথের মতো বাঙালি কবি 'র কাছ থেকে আশা করিনি৷ পণ্ডিত ড. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ কবি 'র একথা মেনে নিতে পারেননি৷ বরং বিখ্যাত এই ভাষা বিজ্ঞানী ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দে অনুষ্ঠিত বিশ্বভারতির সভায় তিনি বাংলাভাষার শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করে বাংলাকে ভারতের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা ঘোষণার দাবি উত্থাপন করেন৷ কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় ড. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ তাঁর বক্তব্যের এক পর্যায়ে ঘোষণা করেন, 'শুধু ভারতবর্ষে কেন সমগ্র এশিয়া উপমহাদেশে বাংলাভাষার স্থান হবে সর্বোচ্চ ৷ (ড. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ শতবর্ষ পূর্তি স্মারক,সম্পাদনায়,মোহাম্মদ আবু তালিব) ৷
সুতরাং আমরা দ্বিধাহীনচিত্তে একথা বলতে পারি,রবীন্দ্রনাথ আমাদের ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদের উৎস হতে পারে না ৷ এর প্রমাণ স্বরূপ আমরা বলতে পারি,আমাদের ৫২ এর ভাষা আন্দোলনে কেউ রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যকে আন্দোলনের আকর হিসেবে নেননি৷
তথ্যসূত্র: দ্রাবিড় বাংলার রাজনিতী-সৈয়দ মবনু |
আসছে রবীন্দ্রনাথের জন্মদিনে যে কথাগুলা রবীন্দ্র পূজারীরা বলতে পারেন-
১.রবীন্দ্রনাথ আমাদের জাতীয় চেতনার উৎস৷(অথচ উনি কখনও স্বাধীন একটি বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেননি)
২.রবীন্দ্রনাথের আদর্শ ঘরে ঘরে পৌছে দিতে হবে৷( সমগ্র ভারতবর্ষ যখন স্বাধীনতার আন্দোলনে প্রতিবাদ মূখর তখন তিনি উল্টো জালিম ব্রিটিশ শাসকে লেজুড়বৃত্তি করেছেন৷ একজন পরাধীন আজ্ঞাবহ মানুষ কীভাবে আদর্শ হতে পারে? প্রশ্ন রইল ওদের কাছে৷)
৩.রবীন্দ্রনাথ অসাম্প্রদায়িকতার প্রতীক৷ (শরৎচন্দ্র যখন 'পথের দাবি' উপন্যাস লিখলেন,যা ছিলো ব্রিটিশ বিরোধী,সাথে সাথে উনি তার প্রতিবাদ করলেন৷ কিন্তু তার গুরু বঙ্কিম বাবু যখন প্রচন্ড প্রচন্ড মুসলিম বিদ্বেষী সাহিত্য লিখলেন তখন তিনি মৌনতা অবলম্বন করলেন৷ অসাম্প্রদায়িতা বটে!
বিষয়: বিবিধ
১৪০৬ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
রবিন্দ্রনাথ ছিলেন সর্বভারতিয় মতবাদে উদ্বুদ্ধ। যে মতবাদ এর ভিত্তি প্রাচিন হিন্দু ঐতিহ্য।
মন্তব্য করতে লগইন করুন